ছবি: ইন্টারনেট




মাসিক বা পিরিয়ড মেয়েদের জন্য প্রাকৃতিক,স্বাভাবিক ব্যাপার হলেও এটি নিয়ে কথা বলতে অনেকে লজ্জাবোধ করে থাকে।এই মাসিক সময়মতো হওয়া মানেই একটা মেয়ে সুস্থ,স্বাভাবিক এটাও অনেকে ্যায় না।চক্ষুলজ্জার কারণে অনেকে এ ব্যাপারে অসচেতন।তাই এটি নিয়ে শুধু মেয়ে নয়,ছেলেদেরও জানা উচিত যাতে তারা তার মা,বোন,স্ত্রীর ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে পারে।

 

এখন জেনে নেই এই পিরিয়ড কি।প্রতি মাসের একটি  নির্দিষ্ট সময়ে মেয়েদের গর্ভধারন না হওয়ার ফলে জরায়ুর আবরনকারী রক্ত এবং টিস্যুসমূহ যোনিপথে বের হয়ে আসে শরীর থেকে, তাকেই পিরিয়ড বলে।

 ঋতুচক্র বা Menstruation cycle  প্রতিমাসে একবার হয় সাধারণত শরীরকে গর্ভাবস্থার জন্য রেডি করতে। মেয়েদের দেহে দুইটা ডিম্বাশয় থাকে,প্রত্যেকটাতে অনেকগুলো ছোট ছোট ডিম্বাণু থাকে যা খালি চোখে দেখা প্রায় অসম্ভব। এস্ট্রোজেন আর প্রোজেস্টেরন হরমোন ডিম্বাণুগুলোকে পরিণত করে এবং সম্পূর্ণ পদ্ধতি চালায়। মাসিকের মধ্যিসময়ে ডিম্বাণু পরিণত হলে হরমোনগুলো ডিম্বাশয়কে ডিম্বক ছেড়ে দেয়ার সংকেত পাঠায়।পরিণত ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে বেরিয়ে ফেলোপিয়ান টিঊব দিয়ে(ডিম্বোস্ফুটন বা ovulation বলে) ইউটেরাসের দিকে চলে আসে। এসময় ব্লটিং, স্পোটিং,তল্পেটের একপাশে ব্যথা হতে পারে।এস্ট্রোজেন হরমোন ইউটেরাসের আস্তরণকারী পর্দা বা linings কে ভারী আর স্পোঞ্জী করে প্রেগন্যান্সির জন্য। Ovulation এর পরে প্রোজেস্টেরন হরমোন উৎপাদন হয় যা জরায়ু বা ইউটেরাসকে প্রেগন্যান্সির জন্য তৈরি করে, endometriumকে স্থিতিশীল রাখে যাতে নিষিক্ত ডিম্বক ধারণ করতে পারে। ডিম্বক ইউটেরাইন ওয়ালে গিয়ে হরমোন প্রডিউসিং প্লাসেন্টা(Hormone producing placenta)তৈরি করে, কিন্তু শরীরে স্পার্ম সেলের অনুপস্থিতি অর্থাৎ গর্ভাবস্থার হরমোন তৈরি না হয়,কোন সংকেত না পেয়ে প্রোজেস্টেরন আর এস্ট্রোজেন হরমোন এর পরিমাণ কমতে শুরু হয়।এইভাবে হরমোন এর পরিমান কমার কারণে এন্ডোমেট্রিয়াম খসে পড়ে,Prostaglandin হরমোন উৎপাদন হয় যা ইউটেরাসের সংকোচন বাড়িয়ে দেয়,ফলে রক্তসহ এন্ডোমেট্রিয়াম টিস্যু যোনিপথে বের হয়ে আসে। এটাই হচ্ছে মাসিক বা পিরিয়ড।

এটি ২৪-৩৮ দিন পর পর একবার অর্থাৎ ৪-৮ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

 *সাধারন রক্তক্ষরণ ৫-৮০মিলি (৬ টেবিলস্পোন পর্যন্ত) , তার বেশি হলে হেভি মেন্সট্রুয়েশন বলা হয়ে থাকে।ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো। মাপার জন্য মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।

 *৩-১৬টি রেগুলার প্যাড বা ট্যাম্পন লাগতে পারে পরিমানভেদে।

 *খাবার,পানির পরিমাণ,পরিবেশগত প্রভাব,শারীরিক গঠন,অন্য কোন সমস্যা বা ওষুধ সেবনের কারণে পরিমাণে কম বেশী হতে পারে।



পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা এবং অন্যান্য সচেতনতা:

 ন্যাপকিন ব্যবহারে অবশ্যই ভালো ব্র‍্যান্ড এর Lowest absorbance rate অর্থাৎ যেসব প্যাড কম সময় ব্লিডিং ধরে রাখে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে এবং প্রত্যেকবার পরিবর্তন করার সময় প্যাড চেক করে নিতে হবে।

প্যাড একদম পরিষ্কার থাকলেও সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা ব্যবহার করা যাবে। ব্লিডিং বেশি হলে আরো আগে পরিবর্তন করতে হবে। বেশি সময় প্যাড ব্যবহার করলে উষ্ণ আর স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা পেয়ে vaginal organisms বা অনুজীবগুলো সংখ্যা বৃদ্ধি শুরু করে এতে UTI(Urinary Tract Infection),Vaginal infection, skin rash etc হতে পারে।

কেউ ট্যাম্পন ব্যবহার করলে বা ম্যান্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ দুই ঘন্টা ব্যবহার করা যাবে। ট্যাম্পন বেশিক্ষন যোনিপথে রেখে দিলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে একটা পরিবেশ তৈরী হয় যাকে TSS(Toxic Shock Syndrome) বলে। এতে ভয়ানক সংক্রমন হয়ে শরীর শকে চলে যায়,এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

প্রতিদিন অবশ্যই একবার আন্ডারওয়্যার চেঞ্জ করতে হবে,প্যাড চেঞ্জ করার সময় বাইরের চারপাশের ব্লাড পরিষ্কার করতে হবে ঠিকভাবে সাবান আর কুসুম গরম বা নরমাল পানি দিয়ে যাতে ইনফেকশন না হয় তবে কোন সাবান বা ভ্যাজাইনাল ক্লিনিং প্রোডাক্ট ভ্যাজাইনা বা ভালবাতে ইউজ করা যাবেনা। ভ্যাজাইনা এর নিজের ক্লিনিং ম্যাকানিজম আছে যা ভালো এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া এর জন্য আলাদা। বাইরের পণ্য ব্যবহার করলে ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলো মারা যেতে পারে, এতে সংক্রমনের সুযোগ বেড়ে যায়। Undergarment ভালো করে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে যাতে রক্ত লেগে না থাকে এবং অধিক সতর্কতা হিসেবে রোদে শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে microorganisms বা অনুজীব রয়ে গেলে মারা যায়।

সবসময় ভ্যাজাইনা থেকে এনাসের দিকে টিস্যু বা হাত দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।এটা হচ্ছে সঠিক পদ্ধতি এবং ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে উল্টো দিকে করলে anus বা মলাশয়ের ব্যাকটেরিয়া ভ্যাজাইনাতে প্রবেশ করে সংক্রমনের আশংকা থাকে।

প্যাডের রক্ত ভালোভাবে পরিষ্কার করে দুর্গন্ধ এড়াতে টিস্যু বা বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ ব্যবহার করে ঢেকে নিতে  হবে যাতে পরিবেশবান্ধব হয় এবং বসতবাড়ি থেকে দুরে পরিত্যাগের  ব্যবস্থা করতে হবে

যেকোন একটা পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।হয় একটা প্যাড বা একটা ট্যাম্পন। অনেক সময় বেশিক্ষণ টিকায় রাখতে (লং জার্নি, মিটিং,অনুষ্ঠান ইত্যাদি) এর জন্য প্যাড+কাপড়,দুইটা প্যাড বা প্যাড+ ট্যাম্পন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা সাময়িক সমাধান দেয় তবে আগামীতে র‍্যাশেস,ইনফেকশন,খিটখিটে মেজাজ এমনকি TSS(Toxic Shock Syndrome) ঘটাতে পারে।

বাইরে গেলে অতিরিক্ত প্যাড নেয়ার সময় অবশ্যই পরিস্কার পাউচ বা ব্যাগ ইউজ করতে হবে। পরিস্কার ব্যাগে বহন না করলে ওই প্যাড ব্যবহারে UTI, vaginal infection, rashes হতে পারে।

তুলা,কাপড়,টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করা যাবেনা। এগুলোর অপরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা থাকে,তাছাড়া শোষণ ক্ষমতা একদম নেই বললেই চলে,অতএব ইনফেকশনসহ বিভিন্ন ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়।

প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। সাথে খাবার-দাবারে সচেতন হতে হবে।পিরিয়ডকালীন সাধারণত আমরা সব খাবারই খাই আর যা খাইনা তা আগের যুগের কুসংস্কার অনুসরণ করে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে,মাসিকের সময় ঘাম,মুড সুইং,ভমিটিং,দুর্বলতা, মাথাব্যাথা, হজমশক্তি এর সমস্যা, পা ব্যথা,তল্পেটের অতিরিক্ত ব্যাথা,অস্থিরতা ইত্যাদি সমস্যার পেছনে খাবারের অনেকটুকু ভূমিকা আছে। মানুষের গঠন,পরিবেশগত,জিনগত,অভ্যাসগত কারণে কিছু রেস্ট্রিকটেড খাবারেও সমস্যা না থাকতে পারে আবার বিভিন্ন ব্যাক্তিগত কারন যেমন এলার্জি বা অন্য কারণে যেসব খাবার খাওয়া দরকার তা নাও খেতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজে থেকে বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে একটা সঠিক খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে।

যেসব খাবার পরিহার করবো

এলকোহলঃসাময়িক ব্যাথা দূর করতে খেলেও আগামিতে এটি এস্ট্রোজেন লেভেল শরীরে বাড়িয়ে দিবে যা অনিয়মিত পিরিয়ড এর সমস্যা তৈরি করবে। তাছাড়া শরীরে পানি ধারন ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে এবং বিভিন্ন রোগ হবে।

ক্যাফেইনেটেড প্রোডাক্টঃ চা,কফি ইত্যাদি ব্লাড প্রেশার,উত্তেজনা,হার্ট রেইট বাড়িয়ে দেয়।

প্রোসেসড আর ফ্রাইড খাবার যেমন ফ্রোজেন ফুড,আচার,চিপ্স ইত্যাদিতে ট্রান্স ফ্যাটস(Trans fats) বা হাইড্রোজিনেটেড ভেইজিটেবিল ওয়েল(Hydrogenated vegetable oil)থাকায় এস্ট্রোজেন লেভেল বাড়িয়ে দেয়, এতে মুড সুইং বেড়ে যায়।

অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার স্টোমাক গ্যাস তৈরি করে। মাসিকের সময় স্কিন এমনিতেই  সেন্সিটিভ থাকে। এসব খাবার আরো ড্রাই আর ডিহাইড্রেটেড করে ফেলে স্কিনকে।

দই (ক্যালসিয়াম থাকে)ছাড়া বাকি ডেইরি প্রোডাক্টে যেমন পনির,ক্রিম,দুধে সাধারণত এরাকিডনিক এসিড(Arachidonic acid) থাকায় ম্যান্সট্রুয়াল ক্রাম্পস বা খিচুনি এর সমস্যা তৈরি করে।সেক্ষেত্রে বাটার মিল্ক,টোনড মিল্ক,কাজুবাদাম খাওয়া যেতে পারে।

অতিরিক্ত লবনাক্ত খাবার যেমন ক্যানড ফুড,স্যুপ,বেকন খাওয়া উচিত না।মাসিকের সময় হরমোনগুলো সাধারণত শরীরে পানি ধরে রাখে,এগুলো খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে গ্যাস,ব্লটিং ইত্যাদি হতে পারে।

অনেকের আবার এক্ষেত্রে অনিয়ম দেখা যায় যেটা ভালো লক্ষণ না

 ১.তিন মাসের অধিক সময় ধরে পিরিয়ড বন্ধ কিন্তু আপনি গর্ভধারন করেননি

২.খুবই কম রক্তক্ষরন

৩.অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে প্রতি এক/দুই ঘন্টা পর পর প্যাড বা ট্যাম্পন পরিবর্তন করতে হচ্ছে

৪.কয়েক মাস(৩/৪/৫) পর পর একবার মাসিক

৫.মাসিক অনেকদিন পর্যন্ত (প্রায় ১২-১৫ দিন) চলছে অথবা অনেক কম (২/৩ দিনে) শেষ হয়ে যাচ্ছে

৬.অতিরিক্ত ব্যথার কারণে চলাফেরা কষ্টসাধ্য ,এমনকি মেডিকেশন লাগছে

৭.অতিরিক্ত মুড সুইংইয়ে শারীরিক বা মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারছেন না

৮…পিরিয়ড প্রতি মাসেই হচ্ছে কিন্তু  ২১ দিনের কম বা ৩৫ দিনের বেশি ব্যবধানে ইত্যাদি।

অনিয়মিত পিরিয়ড

১.দেহে Estrogen & Progesterone হরমোনগুলোর কার্যকারিতায় ভারসাম্য না থাকায়

২.অতিরিক্ত ওজন বা স্থুলতা শরীরে ইনসুলিনের ওপর প্রভাব ফেলায়

৩.খাবারে অরুচি ‘eating disorder’ এবং কম ক্যালরি গ্রহনে ওভুলেশনের হরমোনগুলো উৎপাদন হতে না পারায়

৪.BMI ১৮.৫০ এর নিচে হলে

৫.অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম,বিশেষ করে এথলেট দের ক্ষেত্রে ‘এমেনরিয়া’/ amenorrhea অর্থাৎ  পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়

৬.শরীরে অন্য রোগ থাকলে যেমন- ডায়াবেটিস মেলিটাস টাইপ ২ ,উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ ইত্যাদি

৭.শরীরের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ক্রমাগত সেবনে যেমন- Antidepressant, Anti androgen,Aspirin,Ibuprofen, Naproxen ইত্যাদি

৮.ধূমপান এবং তামাক গ্রহণ মস্তিষ্ককে পিরিয়ডের হরমোন উৎপাদন আর নিয়ন্ত্রনে বাঁধা দেয়ায়

৯.অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক অবকাঠামো আর পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, যা পিরিয়ডের স্বাভাবিকতার ওপর প্রভাব ফেলে

 

অস্বাভাবিক অনিয়মে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি

 Polycystic Ovary Syndrome(POCS) হলো ডিম্বাশয়ে সৃষ্ট কিছু সংখ্যক ছোট ,তরল-ভর্তি থলে যেগুলাকে সিস্ট বলে। এই অবস্থায় একজন নারী প্রতি মাসে পরিণত ডিম্বক উৎপাদন আর ত্যাগ করতে পারেনা,ফলে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়।এছাড়া ছেলেদের মত মাথায় টাক, মুখে এবং শরীরে অতিরিক্ত চুল(male sex hormone- androgen or testosterone এর পরিমাণ শরীরে বেড়ে যায়), স্থুলতা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে ইনফারটিলিটি অর্থাৎ গর্ভধারন সক্ষমতা হারিয়ে ফেল!!!

ওজন কমাতে পারলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা কমবে, এতে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে ডিম্বোস্ফুটনের সুযোগ বাড়ে!

গবেষনায় দেখা যায়,যাদের পিরিয়ড অনিয়মিত তাদের ৪৪% এর থাইরয়েডজনিত সমস্যা (Hypothyroidism বা থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সঠিকভাবে থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করতে না পারা)রয়েছে,সাথে ঘাড় ফুলে যাওয়া,অস্থিরতা,দুর্বলতা, ঠান্ডা লাগা,ওজনের পরিবর্তন, দ্রুত বক্ষস্পন্দন ইত্যাদি দেখা দেয়

এক্ষেত্রে ডাক্তার ওষুধ ,রেডিওএক্টিভ আয়োডিন থেরাপি বা সার্জারি এর পরামর্শ দিতে পারেন অবস্থা বুঝে

Uterine Fibroids হচ্ছে ইউটেরাসের ওয়ালে সৃষ্টি হওয়া ছোট টিউমার। এগুলা সাধারনত নন-ক্যান্সারাস হয় কিন্তু এক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে এনেমিয়া হতে পারে

 সঠিক সময়ে ব্যথা অনুযায়ী ওষুধ ,টিউমারে সমস্যা সৃষ্টি হলে সার্জারি আর এনেমিয়ায় আয়রন সাপ্লিমেন্ট নিলে সুস্থ হওয়া সম্ভব

অনিয়মিত পিরিয়ড cervical and endometrial cancer এর অন্যতম লক্ষন।তাছাড়া Endometriosis এ এন্ডমেট্রিয়াল কোষগুলো জরায়ুর বাইরে থাকায়(সাধারন পরিস্থিতিতে ভেতরে থাকে) রক্তক্ষরনে বাঁধা দেয়। এই কোষগুলো ক্যান্সারাস না হলেও ,গর্ভধারন অবস্থায় মারাত্মক ব্যথা সৃষ্টি করে)

কিন্তু ক্যান্সার না হয়ে অন্য স্বাভাবিক সমস্যাও থাকতে পারে তাই সরাসরি ডাক্তারের কাছে যাওয়াই নিরাপদ

Pelvic inflammatory disease (PID) হচ্ছে নারীদের প্রজনন্তন্ত্রের একধরনের সংক্রামণ। নারীদের ক্ষেত্রে এইডস এর পরে এটিই সবচেয়ে বেশি সংঘটিত জটিল যৌনবাহিত সংক্রামণ

দ্রুত পরিলক্ষনে এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু সংক্রামণ ছড়িয়ে পড়লে তা ফেলোপিয়ান টিউব এবং জরায়ুর ক্ষতি করতে পারে , পরিণতিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। PID এর বিভিন্ন লক্ষণ আছে যেমন দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে বা সহবাসের পর রক্তক্ষরণ

Infertility অর্থাৎ গর্ভধারন করতে অক্ষমতা হচ্ছে অনিয়মিত পিরিয়ডের সবচেয়ে স্বাভাবিক আর সম্ভাবনাময় ঝুঁকি

এই বিষয়ে মানুষ অনেক চিন্তিত থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিয়মের পরও ডিম্বোস্ফুটন হয় এবং গর্ভধারণ করা সম্ভব হয়। তাই চিন্তিত না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 ডাক্তার সাধারনত কিছু বিষয় জানতে চানঃ

 ১.পূর্বের মেডিকেল অবস্থা

২.পরিবারের বাকিদের মেডিকেল অবস্থা

৩.কোনো মানসিক,পারিবারিক বা সামাজিক চাপ আছে কি না

৪.খাবারে বা ওজনের হেরফের হয়েছে কিনা

৫.যৌনজীবন পরিস্থিতি

৬.কায়িক পরিশ্রমের পরিমাণ

বলে রাখা ভালো, ডাক্তারের কাছে কোনো বিষয়ে কিছু লুকানোর পরিণাম আগামীতে অনেক বড় হয়ে যেতে পারে!

ডাক্তারের যদি মনে হয় জটিল কোনো কারণ সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন যেমন –

 ১.গাইনাকোলোজিস্ট বা স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ: যদি অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ স্ত্রীপ্রজননতন্ত্র সম্পর্কিত হয়

২.এন্ডোক্রিনোলোজিস্ট বা অন্তঃস্রাবিশেষজ্ঞঃ যদি কারণটা হরমোন সম্পর্কিত হয়।


আরও পড়ুন 

ধনে পাতার ব্যবহার

হারবাল ঔষধ

লবঙ্গের মশা তাড়ানোসহ অন্যান্য ব্যবহার

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন